ঢাকা : ছেলের ক্ষোভে জিডি(সাধারন ডায়রি)পর্যন্ত করেননি তার বাবা। ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত সাব্বিরের লাশ দেখলে চিনতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আজিজ আহমেদ।
বুধবার(২৭ জুলাই) পুলিশ সুপার কার্যাালয়ে সংবাদ সম্মেলন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা আজিজুর হকের বরাত দিয়ে এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হককে তদন্ত করে বাকলিয়া থেকে এনেছেন।বাকলিয়াতে তাদের ঠিকানা।
তিনি আরো বলেন,নিহত সাব্বিরের ছবি পত্রিকায় ভালভাবে ছাপানো হয়নি।আমরা ডিএমপি থেকে অনলাইনে ছবিটা সংগ্রহ করেছি।আমি এবং সহকারী পুলিশ সুপার আজিজুল হককে ছবিটা বড় করে দেখিয়েছি।তিনি (সাব্বিরের বাবা)বলেছেন ছবিটা দেখে তাঁর ছেলে কিনা সন্দেহ হয়।
সন্দেহ কেন হয় জানতে চাইলে আজিজের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন,চোখ,চুল ও বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ নিয়ে তার সন্দেহ হয়।
আরো কাছাকাছি মিল আছে জানিয়ে আজিজুল হক বলেন,তাঁর ছেলের মুখে এরকম হালকা দাড়ি উঠেছিল সব কিছুতে মিল পাচ্চেন তারপরও একটু সন্দেহ হয়।তখন আজিজের কথার ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার(গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমানের সাথে তার বাবার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়।
পুলিশের সাথে আলাপকালে আজিজ আহমেদ বলেছিল,আমাকে অন্তত মরদেহটা দেখার সুযোগ করে দিন দেখলে তো আমি সরাসরি বুঝতে পারবো।তখন ডিএমপির কর্মকর্তারাও আজিজকে ঢাকায় এসে মরদেহ শনাক্ত করার পরামর্শ দেন।ঢাকায় এসে মরদেহ শনাক্ত করে যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া হবে।তখন আজিজ নিজেই বললেন যদি তার সন্তান হয় তাহলে লাশ গ্রহন করবেন না। নিজে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের ডেকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন।
তিনি আরো বলেন,‘আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে ছেলেটা আমার না।কারণ গতকাল ফেইসবুকে ছবি দেখে মিলিয়ে দেখছিলাম, এখন যখন বিভিন্ন এঙ্গেলে বড় করে দেখছি মনে হচ্ছে এটা আমার ছেলে না।
চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার বলেন,এখন প্রাথমিক কাজ হলো আজিজুল হক ঢাকায় গিয়ে মরদেহটি দেখবেন,তারপর যদি শনাক্ত করতে পারেন তার ছেলে; তখন পুলিশ কার্যালয়ে এসে পুলিশ সুপারের সাহায্য নিয়ে বক্তব্য দিবেন বলেছিলেন আজিজ।
পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে সাব্বির নিঁেখাজ।রাউজানের একটি বিয়েতে যাবে বলে ৫০০ টাকা নিয়েছে তার ভাষ্য।ছেলের ক্ষোভে কোন জিডি পর্যন্ত করেননি আজিজুল হক।
২০১৩ সালের মাঝামাঝিতে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সাব্বির।সাব্বিরের কথা-বার্তা,আচার-আচরণে কিছু পরিবর্তন আসে।সে যখন তার আত্মীয় স্বজনের সাথে ধর্ম নিয়ে কথা-বার্তা বলতো তখন তাঁদের ইবাদত হচ্ছে না বলে তর্কে জড়াত।তার আত্মীয় স্বজনকে গালাগালি করতো যে তাদের কাজগুলো অনৈতিক ও অনৈসলামিক।
তাবলীগের কথা বলে সে মাঝে মাঝে ১০-১২ দিনের জন্য উধাও হয়ে যেত।গোসলে সাবান ব্যবহার করতো না।নিজে জবাই না করলে কোন মাংস সে খেত না।বাবা মাজার ভক্ত ছিল বলে সে মাঝে মাঝে বাবার সাথে ঝগড়া করতো।
২০১৩ সাাল থেকে তার পরিবার এই পরিবর্তন গুলো দেখছে।২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ সে উধাও হয়ে যায়। বাবা ছেলেকে ফিরে পাবে বলে আনোয়ারা থানা ও বাকলিয়া থানায় জিডিও করেননি।
আজিজুর হক বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব সার্কেল ৭ এর টেক্স কালেক্টর।সে আনোয়ারা বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি।
পুলিশ সুপার আরো বলেন,চট্টগ্রাম জেলায় ১০ জন নিখোঁজের তালিকা পেয়েছি।১০ জনই আবার পরবর্তীতে পাওয়া গেছে।
