ঢাকা : প্রধান ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ সে প্রশ্ন তুলেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের ।স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে সরকার কেন এখনও নিষিদ্ধ করছে না,
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সিটিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের আয়োজনে ইসলামের এক আলোচনায় মাসঊদ এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামকে উদ্দেশ্য করে মাওলানা মাসঊদ বলেন, আপনারা এখনও জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করতে লজ্জা পাচ্ছেন কেন।’ তিনি বলেন, অনেকেই আমাকে বলে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে। আমি বলি তা কি এখনও বাকি আছে? দেশের সকল জঙ্গি সংগঠনের পেছনে আছে জামায়াত। তারা আন্ডারগ্রাউন্ডেরও সুবিধা নিচ্ছে, বাহিরেও সুবিধা নিচ্ছে।’
জামায়াতকে ইঁদুরের সঙ্গে তুলনা করে মাওলানা মাসঊদ বলেন, ‘ইসলামের একটি ফতোয়া আছে যদি কোন কুয়ার মধ্যে ইঁদুর পড়ে যায়। এরপর এই কুয়া থেকে ইঁদুর তুলে দুইশত বাতলি পানি ফেলে দিলেই পানিটা পাক হয়ে যাবে। আর তেমনিভাবে জামায়াত-শিবিরের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে, তাদের নিষিদ্ধ না করলে এদেশ থেকে জঙ্গিবাদ দূর করা যাবে না।’
ফরিদ উদ্দিন মাসঊদ বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে জঙ্গিবাদের মা-বাপ হলো জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদূদী। তিনি কীভাবে তরুণদের ব্রেনওয়াশ করতে পারেন তা আমরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেখেছি। সে সময় কাদের মোল্লা, মুজাহিদরা তরুণ ছিলেন, কিন্তু মওদূদীর দর্শন তাদেরকে হিংস্র বানিয়ে ফেলে। এখনও সেই দর্শনই তরুণদেন ব্রেনওয়াশ করে হিংস্র বানাচ্ছে।
এই ইসলামী চিন্তাবিদ বলেন, যেসব তরুণ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে, তারা চৈতন্যের বিকারগ্রস্তরা শিকার। এখন যদি আমরা তাদের বলি জঙ্গিবাদ ইসলামে হারাম কিন্তু তাতেও তারা ফিরবে না। আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের দ্বারাও তাদের ফিরানো যাবে না। কারণ তার মনন ও চেতনার মধ্যে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে জঙ্গিবাদ বেহশতের নয়, জাহান্নামের পথ। আত্মঘাতী হওয়া ইসলামে জঘন্য বিষয়।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, আগে জঙ্গিদের ‘টার্গেট গ্রুপ’ছিল মাদ্রাসার ছাত্র। এখন তারা ইংরেজি মাধ্যম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাত বাড়িয়েছে। এই ধারার শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় জ্ঞান কম থাকায় সহজে তাদের মগজ ধোলাই করা যায়।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে মানুষের অবাধ বিচরণ রয়েছে। কিন্তু জঙ্গিরা আড়াল পছন্দ করে। এই পরিবেশ তারা পায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই তারা এগুলোকে টার্গেট করেছে।
আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে আমরা যেভাবে জনযুদ্ধে পরিণত করতে পেরেছি, ঠিক তেমনি আমাদের আরেকটি জনযুদ্ধ করতে হবে। এই যুদ্ধে আমরা সবাই শামিল হলে জঙ্গিদের পরাজায় আর আমাদের বিজয় হবে’।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মেছবাহুর রহমান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার গোলাম মাওলা নক্শবন্দী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আহসান উল্লাহ, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
