রিপাবলিকান পার্টির নেতারাও নির্বাচনকে ঘিরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদ্রুপ মন্তব্য ও প্রমাণ ছাড়াই একের পর এক ‘মিথ্যা মামলার’ সমালোচনা করেছেন । দলটির সিনেটর প্যাট টুমি বলেছেন অঙ্গরাজ্যের ভোটের গণনা চূড়ান্ত হয়ে গেলে জিতুক বা হারুক সব দলের উচিত নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়া।

ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প মামলা ঠুকলেও, গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন টুমি। বলেছেন, ‘পেনসিলভেনিয়ার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সব ভোট অবশ্যই গণনা করতে হবে। যতদিন সময় লাগুক না কেন।’

মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ের পথে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল নির্ধারণের জন্য আর হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যের ফল বাকি আছে। রাজ্যগুলো হচ্ছে- জর্জিয়া, নেভাডা, পেনসিলভেইনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা। শেষের দিকে এসে চারটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোট গণনা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। এসব অঙ্গরাজ্যে ভোট চুরি হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। এছাড়া ভোট চ্যালেঞ্জ করে তার প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে মামলাও করা হয়েছে।

ট্রাম্পের কাণ্ডজ্ঞানহীন এমন আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছেন টেক্সাসের অবসরপ্রাপ্ত রিপাবলিকান নেতা উইল হার্ড। তিনি বলেছেন, দায়িত্বে থাকা একজন প্রেসিডেন্ট আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অবমাননা করছেন এবং অসংখ্য আমেরিকানদের ভোটাধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। কোনও প্রমাণ ছাড়া এমন অভিযোগ শুধু যে বিপজ্জনক ও ভুল তা নয়, এটি আমাদের দেশ যে ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে সেটিকেই অবমাননা করে। সব আমেরিকান নাগরিকের ভোটগণনা হওয়া উচিত।

ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য অ্যাডাম কঞ্জিঙ্গার বলেছেন, আমরা চাই সব ভোট গণনা হোক। হ্যাঁ অবশ্যই সব বৈধ ভোট। জালিয়াতি নিয়ে আপনার যদি কোনও উদ্বেগ থাকে তাহলে প্রমাণ হাজির করুন এবং আদালতে যান। ভুয়া তথ্য তুলে ধরা বন্ধ করুন। এগুলো একেবারে পাগলামি হয়ে যাচ্ছে।

ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর ল্যারি হোগান বলেছেন, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অবমাননা করে প্রেসিডেন্টের আজ৩ৱকের রাতের মন্তব্যের কোনও অজুহাত থাকতে পারে না। আমেরিকা ভোট গণনা করছে এবং আমাদের ফলাফলকে মেনে নেওয়া উচিত। যেমনটি আমরা অতীতে করেছি। কোনও নির্বাচন বা ব্যক্তি আমাদের গণতন্ত্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না।

২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সিনেটর মিট রমনিও ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। টুইটারে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সব ভোট গণনা গণতন্ত্রের হৃদপিণ্ড। এই প্রক্রিয়া অনেক সময় দীর্ঘ হয় এবং যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের জন্য হতাশাজনক। ভোট গণনা হবেই। যদি কোনও অনিয়মের অভিযোগ থাকে সেগুলো তদন্ত হবে এবং আদালতে নিষ্পত্তি হবে। গণতন্ত্র, আমাদের সংবিধান ও আমেরিকার জনগণের ওপর আস্থা রাখুন।

প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য চার্লি ডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যকে কেবল নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেছেন। আরেক সদস্য পল মিচেল কঠোর ভাষায় সমালোচনা করলেও কিছু সহমর্মিতাও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, সব বৈধ ভোট গণনা হচ্ছে এবং হওয়া উচিত। যদি কোনও ইস্যু থাকে সেগুলো চিহ্নিত করার উপায় আছে। যদি বেআইনি কিছুর কারও কাছে প্রমাণ থাকে তা তুলে ধরা এবং সমাধান হওয়া উচিত। এছাড়া যে কোনও কিছু আমাদের নির্বাচনের অখণ্ডতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং তা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে জয় ও পরাজয়ের অভিজ্ঞতা আমার আছে। আমি ব্যক্তিগভাবে জানি, পরাজয় অনেক কষ্টের। কিন্তু আমাদের জাতি চায় রাজনৈতিক নেতারা জয় ও পরাজয় কৃতজ্ঞতা ও পরিপক্কতার সঙ্গে মেনে নেওয়া হোক। চলুন ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে দেই।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031