হেফাজতে ইসলামের সম্মেলন ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আগামীকাল রোববার সকালে হাটহাজারী মাদরাসায় এ সম্মেলন শুরুর কথা রয়েছে।  সম্মেলন পরিচালনা করবেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতের আমীর ও মহাসচিব হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও নূর হোসাইন কাসেমীর নাম। তবে এই সম্মেলনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীর সমর্থকরা। তারা বলছেন, সম্মেলনের পুরো প্রক্রিয়াটিই অবৈধ।
এদিকে হেফাজতের  প্রয়াত আমীর মাওলানা আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে।
হেফাজতের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রচার সম্পাদক  আ ন ম আহমদ উল্লাহ বলেন, সবাইকে নিয়ে সম্মেলন করে হেফাজতকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য সম্মানিত অনেক আলেম চেষ্টা করছেন। তাতে সরকারের দালাল বলে এসব আলেমরা নাজেহালও হয়েছেন। তবু আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব।

যদি না হয়, তাহলে নতুন হেফাজতের কার্যক্রম ঘোষণা করবো আমরা। তিনি বলেন, এই সম্মেলনের ডাক অবৈধ। কারণ যিনি এই সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন দুই বছর আগে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এরপর আর তিনি হেফাজতে ফেরার ঘোষণাও দেননি। তিনি কিভাবে সম্মেলন ডাকেন? তাছাড়া এই সম্মেলনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কেউ কিছু জানে না।
বাবুনগরীর সমর্থকদের ভাষ্য, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই দলের মহাসচিব এই সম্মেলন ডেকেছেন। সম্মেলনে জুনায়েদ বাবুনগরী নতুন আমির ও নূর হোসাইন কাসেমী মহাসচিব হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া অন্য কয়েকটি শীর্ষ পদেও পরিবর্তন আসতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এতে মামুনুল হক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হারুন ইজহার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেতে পারেন।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী নন সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন মূলত মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী। যারা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ডাক দিয়েছেন বলে লিখেছেন তারা মনগড়া লিখেছেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মহাসচিব এই সম্মেলন ডেকেছেন। এতে সারা দেশ থেকে ৫০০ প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। সবার উপস্থিতিতে মুরুব্বিরা নেতা নির্বাচন করবেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, জামায়াতের এজেন্ডার কথা যারা বলছেন তারাই জামায়াতের সঙ্গে ২০ দলে আছেন। জামায়াতের এজেন্ডা উনারাই ভাল জানবেন। তাছাড়া এ মুহুর্তে জামায়াত নিয়ে কেন কথা হচ্ছে? এখন কথা বলা দরকার ভারতকে নিয়ে। কথা বলা দরকার দুর্নীতি নিয়ে, ছাত্রলীগের সন্ত্রাস নিয়ে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৯শে জানুয়ারি গঠিত হয়েছিল চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক কওমি আক্বিদাপন্থী অরাজনৈতিক ইসলামি সংগঠন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে ১৩ দফা দাবি নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে তারা।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হেফাজতের আমিরের পদে ছিলেন প্রবীণ আলেম হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী। তৎকালীন সিনিয়র মুহাদ্দিস ও বর্তমান হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মহাসচিব করে হেফাজতের ২২৯ সদস্যের মজলিশে শূরা কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই সময়।

২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে সংগঠনের আমির কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। অবশেষে আমিরের শূন্যপদে পূরণসহ সংগঠনের কমিটিকে ঢেলে সাজানোর জন্য রবিবার কাউন্সিল আহ্বান করা হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031