মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনোভাবে বিএনপি সরকার পরিবর্তনের কথা চিন্তাও করে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বিএনপি কোনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে বলে এখনও প্রত্যেকটা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।’

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট ‘কারচুপি’ ও নাশকতার মামলার প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমা‌বে‌শে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, তারা গণতন্ত্র ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সেই কারণে দেখেছি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন ২৯ তারিখে হয়েছে। রাতের অন্ধকারে জনগণের অধিকারকে তারা লুট করে নিয়েছে। তারপর থেকে দেখেছি, যতগুলো নির্বাচন এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয়েছে প্রত্যেকটা নির্বাচনে তাদের পক্ষে লুট করে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে এই নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা শূন্যের কোটায় চলে এসেছে। তার প্রমাণ পাওয়া যায় ভোট কেন্দ্রে জনগণের উপস্থিতিতে। আমরা ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে দেখলাম, এত সন্ত্রাস! এত কারচুপি! এত ভয় ভীতি প্রদর্শন করার পরও সেখানে ১৪ শতাংশের বেশি ভোট তারা দেখাতে পারেনি।’

ফখরুল বলেন, ‘কি হাস্যকর কথা! কি লজ্জার কথা! প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আমেরিকা নির্বাচন কমিশনের থেকে উন্নত। কেন? কারণ তারা ৫ দিনেও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে না, সেখানে আমরা পাঁচ মিনিটের ফলাফল ঘোষণা করতে পারি। আপনারা তো পারবেন, কারণ আপনাদের ফলাফল আগে থেকেই তৈরি করা থাকে। তাই আপনারা সেটা ঘোষণা করে দেন। নির্বাচন কমিশন- তাদের লজ্জা পর্যন্ত নেই। তাদের লজ্জা-শরম যদি থাকতো তাহলে অনেক আগে পদত্যাগ করে চলে যেত। তারা সম্পূর্ণভাবে অমূল্য সরকারের অধীনস্থ হয়ে কাজ করছে।’

রাজধানীতে বাস পোড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত পরশুদিন আমরা দেখলাম রাজধানীতে ৯টি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এই নাশকতার নিন্দা করেছি। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। বিএনপি গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে বলেই এখনও প্রত্যেকটা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। কেন নিচ্ছি? কারণ আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। অন্য কোনোভাবে আমরা সরকার পরিবর্তনের কথা চিন্তাও করি না, ভাবিও না। কারণ আমাদের দল একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এই সরকারই বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার ইচ্ছাতেই দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা তারেক রহমান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এক লক্ষের বেশি মামলা দিয়ে আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর কারণ একটাই, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে এবং ভিন্নমতকে এখানে রাখা যাবে না।’

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল , যুগ্ম সম্পাদক তবিবুর রহমান সাগর, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন, আকতারুজ্জামান আকতার, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ মানববন্ধনে অংশ নেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031