চট্টগ্রামেও অনুমোদনহীন ক্লিনিক-হাসপাতালের দৌরাত্ম্যে নাকাল নগরবাসীরা ঢাকা এবং সারা দেশের মতো । কেউ জানেনা, কবে থামবে এই অপচিকিৎসার দুষ্টচক্র? নাকি ঢাকার শ্যামলীর মতো পিটিয়ে রোগী মেরে ফেলার পর টনক নড়বে কর্তৃপক্ষের?

সমস্যাটি নিয়ে কথা বলেছি সহকর্মী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষক, নাট্যকর্মী মোস্তফা কামাল যাত্রার সঙ্গে, যিনি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছেন। তার কাছ থেকে জানা গেলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সবচেয়ে অবহেলিত খাত হলো মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ। পুরো চট্টগ্রাম বিভাগে যোগ্য ও মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসক চার-পাঁচজনের বেশি নেই।

তাহলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার নামে অসংখ্য ক্লিনিক-হাসপাতাল নগরে চলছে কাদের দ্বারা? নগরীর আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, ইপিজেড, নাসিরাবাদ বেবি সুপার মার্কেট, হামজার বাগে এমন বহু মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের লাইসেন্স নেই। নেই যোগ্য চিকিৎসক। এমনই দাবি গবেষকদের।

চট্টগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন, এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে কেবল একটি প্রতিষ্ঠান বন্ধের খবর জানা গেছে। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ‘মন নিরাময় কেন্দ্র’ নামের একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র সিলগালা করেছে কর্তৃপক্ষ।

নগরের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার নিরাময় কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, যা অনুমোদন না নিয়ে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিল। সেখান থেকে ১২ জন রোগীকে উদ্ধার করা হয় এবং যথারীতি সংশ্লিষ্ট কাউকেই আটক করা যায় নি।

এমন প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে একটি নয়, অসংখ্য। মানসিক হাসপাতাল ছাড়াও বহু অবৈধ ও অনুনোমদিত ম্যাটারনিটি হাসপাতাল রয়েছে নগরে। রয়েছে বহু প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি। নগর স্বাস্থ্য কার্যক্রমে জড়িত একাধিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের মতে, অবৈধ গর্ভপাত ও নারীদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার নামে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে অদক্ষ লোকজন। যাদের অপচিকিৎসার কবলে কখনো কখনো প্রাণ হারাতে হয় অনেকেই।

মূলত সরকারি নজরদারির অভাবে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের গোপন পৃষ্ঠপোষকতায় এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। মাঝেমধ্যে একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলেও অধিকাংশই থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, অবিলম্বে চট্টগ্রামে অপচিকিৎসার দুষ্টচক্র বন্ধ না করা হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে এবং অপচিকিৎসার নামে রোগীদের সঙ্গে বর্বরতার সুযোগ বাড়াবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031