জামাই জারেড কুশনার ও তার টিম এ সপ্তাহেই সৌদি আরব ও কাতার সফরে আসছেন হোয়াইট হাউজের সিনিয়র উপদেষ্টা এবং প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের । উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে তাদের এই সফর বলে খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে রোববার বলেছেন, এই সফরে সৌদি আরবের নিওম শহরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক হবে জারেড কুশনার ও তার টিমের। অন্যদিকে আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাত হবে কাতারে। উল্লেখ্য, এমন এক সময়ে এই বৈঠক হচ্ছে যখন মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, গত সপ্তাহের রোববার গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সফরে তিনি নিওম শহরে বৈঠক করেছেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে। বৈঠক শেষেই ওই রাতেই তিনি ফিরে গেছেন ইসরাইলে। তবে বিষয়টি এতই গোপন রাখা হয়েছিল যে, তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে পর্যন্ত তিনি এ সম্পর্কে জানাননি।

সৌদি আরব এমন গোপন বৈঠকের কথা অস্বীকার করলেও নেতানিয়াহু কিন্তু হা বা না কিছুই বলেননি। ওই গোপন বৈঠক নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা। ট্রাম্প প্রশাসন এখন ক্ষমতার মেয়াদের শেষের দিকে। তিনি বড়জোর আর দু’মাসের মতো ক্ষমতায় আছেন। এ সময়ে এমন গোপন বৈঠক কেন! এ নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। আবার এই বৈঠকের পরে শুক্রবার ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাকরিজাদেহকে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে বিষয়টি নিশ্চিত না হলেও ইরান এর জন্য দায়ী করেছে ইসরাইলকে। সেখানকার প্রেস টিভি খবর প্রকাশ করেছে যে, হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রর অংশবিশেষ পরীক্ষা করে দেখা গেছে তা ইসরাইলে তৈরি। ফলে কোন ঘটনা কোনদিকে মোড় নিচ্ছে তা বোঝা খুবই জটিল বিষয়।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে অনলাইন এক্সিওজ বলেছে, বেশ কিছু ইস্যুতে একমত করাতে এবং চুক্তিতে আসতে সৌদি আরব ও কাতারের নেতাদের রাজি করাতে তোড়জোড় করে এই সফরে আসছেন কুশনার। কাতারের রাজধানী দোহা’কে সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়ায় ২০১৭ সালে কাতারের বিরুদ্ধে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর। এক্ষেত্রে তারা দোহা’র কাছে ১৩টি দাবি সম্বলিত একটি তালিকা তুলে দিয়েছে। তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। তারা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ এবং এমন অভিযোগ হলো তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত। এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন বলেছেন, উপসাগরীয় সঙ্কট সমাধানই প্রশাসনের অগ্রাধিকারে রয়েছে। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগেই এই সমাধান সম্ভব হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক রাজনীতির একজন বিশেষজ্ঞ এবং ‘দ্য গালফ রিজিয়ন এন্ড ইসরাইল’ বইয়ের লেখক সিগার্ড নিউবাউয়ার বলেছেন, ওই অবরোধের একটি সমাধান দৃশ্যমান। আমরা জানি না সেটা ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার আগে ঘটবে নাকি বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ঘটবে। তবে এটা অসম্ভব নয়। প্রশ্ন হলো, কখন ঘটবে তা।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031