ভাস্কর্য ও মূর্তি ইস্যুতে চরম উস্কানির মুখেও দেশের শান্তি ও স্থিতিশিলতা বজায় রাখার স্বার্থে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সীমাহীন ধৈর্য্যর পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন, আমরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু মনে করিনি, যে কারণে ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করেছি মাত্র। কিন্তু উগ্রবাদী শক্তি ও তাদের উচ্ছৃঙ্খল সহযোগিরা এ নিরবতাকে দুর্বলতা ভেবেছে। তারা দেশের ঐক্য বিনষ্ট করতে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় তবে মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। আজ মঙ্গলবার পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এ সময় সংগঠনের নেতা ও আলেদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি ভূঁইফোড় সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের নামে একটি জঘণ্য মিথ্যা মামলা দাায়ের করেছে।

সঙ্গে আরো দুইজন বিশিষ্ট আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হকের নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এদেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানরা আজ ঐক্যবদ্ধ। শান্তিপ্রিয় ধর্মপ্রাণ মানুষের ধৈর্য্যেরও একটা সীমা আছে। আমরা অনেক অপমান সহ্য করেছি। সরকার যদি তাদের সুবিধাভোগী উগ্র সমর্থক এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী শক্তিগুলোর বাড়াবাড়ি ও উস্কানীমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সাধারণ দেশপ্রেমিক জনতা ও ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।

মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে যারা তার বেশি বিরোধিতা করেছে, বঙ্গবন্ধুর চামড়া খুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র তৈরী করেছে, মৃত্যুর পরে আনন্দ-উল্লাস করেছে, তারাই আজ বঙ্গবন্ধুর সম্মান রক্ষার নামে অপসংস্কৃতি প্রসারে সবচেয়ে এগিয়ে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, এরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও মূল আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশী মুজিবভক্ত হয়ে গেছে। এখানে মনে হওয়া যৌক্তিক যে, বঙ্গবন্ধুর সম্মান তারে উদ্দেশ্য না; বরং তাওহিদ বিরোধী মুর্তিবাদী আদর্শ বিস্তারই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। যা এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেতনা বিরোধী। তাছাড়া, সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করার এবং দেশের সামগ্রিক সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করাও তাদের দূরবর্তী লক্ষ্য।

মূর্তি বা ভাস্কর্য নিয়ে বিরাজমান পরিস্থিতিকে দেশ বিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, ওরা সামাজিক ও ধর্মীয় অস্থিতিশীলতা তৈরী করতে চায়। এ বিষয়টিতে সরকারের অবস্থান নিয়েও আমরা হতাশ। সাধারণ মানুষের নিয়মতান্ত্রিক একটি দাবিকে কেন্দ্র করে যখন কুচক্রিমহল দেশে ওলামাদের বিরুদ্ধে উগ্রতা ছড়াচ্ছে, তখন তারা তা দমন না করে আরো উৎসাহ দিচ্ছে। আমরা মনে করি, তাদের এই ভূমিকা বরং বঙ্গবন্ধুকে ছোট করছে। তার সম্মানকে মানুষের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। অথচ এর কোন দরকার ছিলো না। জনগণ মনে করছে, সরকার তাদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি এবং অনিয়ম আড়াল করতেই এই অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031