উন্নত বিশ্বে রুটিন ডিউটিতে পুলিশ ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে না পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন । এখন থেকে আমরাও সেই বিষয়টি প্রচলন করতে চাই। ট্যাকটিক্যাল বেল্ট প্রথমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এটি ব্যবহার শুরু হবে। এরপর ধাপে ধাপে সবক্ষেত্রে এটির প্রচলন করা হবে। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিনি বলেন, ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে কোনো গোষ্ঠীকে পানি ঘোলা করতে দেয়া হবে না। আমরা পানি পরিষ্কার করে দেবো। থানায় বসে কোনো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হতে পারে না, হবে না।
এ ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
গতকাল রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশের সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘ট্যাকটিক্যাল বেল্ট’ সংযোজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রথম ধাপে ডিএমপি’র সাত হাজার সদস্য ও সিএমপি’র তিন হাজার সদস্য এই ট্যাকটিক্যাল বেল্ট পাবেন। ছয় চেম্বারের আধুনিক এই ট্যাকটিক্যাল বেল্টে থাকবে পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, অতিরিক্ত ম্যাগাজিন, এক্সপেন্ডেবল ব্যাটন, পানির পট, টর্চ লাইট ও ওয়্যারলেস রাখার ব্যবস্থা। এতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাত থাকবে সম্পূর্ণ খালি। ফলে যেকোনো সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে। বেল্টের মূল স্লোগান রাখা হয়েছে ‘হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং’। এতে পুলিশের কাজে গতি আসবে, মনোবলও বাড়বে। একই সঙ্গে পুলিশকে দেখতেও উন্নত দেশের আদলে আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী লাগবে।
সংবাদ সম্মেলনে বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা চাই না ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ এক হাতে ওয়্যারলেস ধরে থাকুক, এক হাত অকুপাইড হয়ে থাকুক। নতুন গিয়ার সংযোজনের ফলে ওয়্যারলেস চলে যাবে বেল্টে। কাঁধে সংযোজিত মাইক্রোফোনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যরা ওয়্যারলেস ব্যবহার করতে পারবেন।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর কেউ দুর্নীতি করবেÑ এটা বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে না। কারণ দুর্নীতির জন্য পুলিশ বাহিনী না। সুতরাং যারা পুলিশে থেকে দুর্নীতি করতে চান তারা চাকরি ছেড়ে দেন। আর যারা ভবিষ্যতে পুলিশে আসবেন বলে ভাবছেন, তারাও মনে খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে এখানে আসবেন না।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহার নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। পুলিশে দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জয়ী হবো।
তিনি বলেন, বেল্টের ক্ষুদ্রাস্ত্র তাদের কাছে মজুত ছিল। এই কাজে তাদের নতুন করে বিশেষ কিছু কেনাকাটা করতে হয়নি। বড় অস্ত্রগুলো প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবহার করবে। সেগুলোও সংরক্ষণ করা হবে। থানায় বসে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হয়- এমন শিরোনামে বেশকিছু সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, তাহলে কী থানা নিরাপদ নয়? সাংবাদিকদের করা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানা কোনো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা কেন্দ্র হতে পারে না। হবে না। এটাই আমরা বলতে পারি। থানা হচ্ছে মানুষের শান্তি ও জীবন রক্ষা করার জায়গা, এর জন্য কাজ করবে থানা। যদিও থানা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তবে আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।
অপর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুলিশের শরীরের সঙ্গে ভিডিও ক্যামেরা লাগানোর একটা উদ্যোগ তারা আগেই নিয়েছিলেন। কিন্তু, কাজটি খুব ব্যয়বহুল। তারপরও তারা পর্যায়ক্রমে ভিডিও ক্যামেরা লাগানোর কাজ শেষ করবেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মঈনুর রহমান চৌধুরী। এসময় পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
