এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি বৃটেনে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস বা রূপান্তরিত করোনাভাইরাস । একে বিদ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। বৃটেনে এই ভাইরাসকে কেন্দ্র করে সারা দুনিয়ায় যখন তোলপাড় চলছে তখন এ মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অবশ্য এর আগে বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছিলেন, এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। নতুন এই ভাইরাস মূল করোনাভাইরাসের মতো অতো বেশি প্রাণঘাতী নয়। তবে মূল ভাইরাসের চেয়ে শতকরা ৭০ গুণ বেশি গতিতে সংক্রমিত করতে পারে। মূল ভাইরাসের গায়ে যে কাঁটার মতো অংশ আছে, তা রূপান্তরিত হয়ে এমন গুণ অর্জন করেছে। এর ফলে পোষক পেলেই সে তাতে আটকে যায় এবং আক্রান্ত করে।
এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে টিয়ার ৪ বা সর্বোচ্চ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকে ইউরোপ সহ বিশ্বের বহু দেশ বৃটেনের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য। বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারতও বৃটিশ ফ্লাইট নিষিদ্ধ করছে। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল রায়ান বলেছেন, এই মহামারিতে বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। আমরা একে নিয়ন্ত্রণের অধীনে নিয়ে এসেছি। এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা সঠিক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর অর্থ হলো আমাদেরকে আরো কঠোর কাজ করতে হবে এ নিয়ে। যদি এই ভাইরাস তার সংক্রমণ বৃদ্ধির সামান্যতম কার্যকারিতা অর্জন করে তাহলে তা আমাদেরকে থামাতে হবে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌম্য স্বামীনাথান দাবি করেছেন, নতুন ধরনের এই করোনা ভাইরাস এরই মধ্যে বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে থাকতে পারে। আমার সন্দেহ যদি অধিক পরিমাণ দেশ তাদের ডাটার দিকে তাকান, তাহলে তারা এই ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট বা এর সঙ্গে সম্পর্কিত ভ্যারিয়েন্ট পেয়ে যেতে পারেন। এর মধ্যে বৃটেন একটি দেশ। তারা এই ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোমের সিকুয়েন্স নিয়ে কাজ করছে। তাই তারা যথার্থ সময়ে এটাকে শনাক্ত করতে পেরেছে।
গত সপ্তাহে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের এই ভাইরাস মূল ভাইরাসের চেয়ে শতকরা ৭০ ভাগ বেশি সংক্রামক। তবে এটা অধিক প্রাণহানীকর বা মারাত্মক অসুস্থ করে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। ওদিকে কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্সের মহাপরিচালক শেখর মান্ডে বলেছেন, করোনাভাইরাসের যে কার্যকর টিকা সেটা সমানভাবে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই এটা নিয়ে নতুন করে কোনো প্যানিক বা পীড়া সৃষ্টির কোনো কারণ নেই।
