বিচারপ্রার্থী অবুঝ দুই শিশুর মা ওয়াসিমা খাতুন নানীর দায়ের করা মামলায় অবশেষে জামিন পেলেন। তবে জামিনের অপব্যবহার করা হলে কিংবা অভিযোগকারীর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করলে নি¤œ আদালত তার জামিন বাতিল করিতে পারবেন। একই সঙ্গে তাদের বাবা মো. তোফায়েলকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চা সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত। বুধবার সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, জামিনের অপব্যবহার করা হলে কিংবা অভিযোগকারীর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করলে নি¤œ আদালত আইন অনুযায়ী জামিন বাতিল করিতে পারবেন। পরবর্তীতে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হলে আসামিকে মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে আদালতে হলফনামা দাখিল করতে হবে।
এর আগে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড. মনিরুজ্জামান আসাদ, এড. শিশির মনির ও কুমার দেবুল দে ওই দুই শিশুকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদ আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালত বিষয়টি নজরে নিয়ে মাকে জামিন ও বাবাকে কেন জামিন দেয়া হবেনা এই মর্মে রুল জারি করেন।

আইনজীবী শিশির মনির ও দেবুল কুমার দে বলেন, মাকে মারধোর করবেনা এই শর্তে মায়ের দায়ের করা মামলায় জামিন দিয়েছেন দুই শিশুর মা ওয়াসিমা খাতুনকে। হাইকোর্টের আদেশের পর আমরা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে শিশুদের মাকে মুক্তি দিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গত পাঁচদিন ধরে মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন আড়াই বছরের ইয়াছিন ও সাড়ে তিন বছরের টুম্পা। ফলে গতকাল মঙ্গলবার মা-বাবাকে কারাগার থেকে বাড়িতে নিয়ে যেতে আদালতে উপস্থিত হন তারা। পরে মা-বাবার জন্য আদালতের বারান্দায় কান্নাকাটি করে। মা-বাবাকে কাছে পাওয়ার এই আহাজারির বিষয়টি গণামাধ্যমে প্রচারের একদিন পর ওই দুই শিশুর মাকে গতকাল জামিন দেন আদালত। জানা যায়, দুই শিশুর নানী মোমেনা বেগম পারিবারিক কলহের জেরে নিজের মেয়ে ওয়াসিমা বেগম ও তার স্বামী মো. তোফায়েলের বিরুদ্ধে চুরি ও মারধরের মামলা করেন। এ মামলায় গত শুক্রবার থেকে কারাগারে শিশুদের মা-বাবা। সেই থেকে শিশুদের দেখার কেউ নেই। বংশালের প্রতিবেশীদের ঘরে আশ্রয় নেন দুই শিশু। তাদের হাত ধরেই দুই ভাইবোন বাবা-মায়ের জামিনের জন্য আদালতে গিয়েছিল। কিন্তু এদিন তাদের মা-বাবাকে জামিন দেননি বিচারক। উল্টো শিশুরা আদালতের ভেতরে কান্নাকাটি করায় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্যকে শোকজ করেছিলেন আদালত।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031