চট্টগ্রামে পৌঁছেছে ভাসানচরে যেতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্বিতীয় দল । এই দলে প্রায় এক হাজার  রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের নৌ-বাহিনীর ঘাট থেকে নৌপথে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম ধাপে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১৩টি বাসে চড়ে চট্টগ্রামে আসে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি দল। ছেড়ে যাওয়া প্রত্যেক বাসে ৩০ জন করে সদস্য ছিল। পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে সমসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী চট্টগ্রামে আসে।
এসব গাড়ির বহরগুলোর সামনে- পেছনে পুলিশের গাড়ি এবং এম্বুলেন্স ছিল। স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে রাজি হওয়ায় এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। চট্টগ্রাম নৌবাহিনী ঘাঁটির অদূরে একটি মাঠে তৈরি করা ক্যাম্পে এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রাখা হয়।

সেখানে তাদের খাবার ও নিরাপদে রাত যাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে পৌঁছার পর স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। শরণার্থীদের ভাষ্য, গত ৪ঠা ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা শরণার্থী ভাসানচরে গেছেন। তারও আগে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে সমুদ্র উপকূলে আটক আরো তিন শতাধিক রোহিঙ্গা সেখানে রয়েছে। যাদের অনেকেই আত্মীয়স্বজন। তাদের কাছে ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধার খবর শুনেই সেখানে যেতে রাজি হয়েছেন তারা।
উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যামেপর (ইস্ট) মাঝি বলেন, আমার ব্লক থেকে কয়েকটি পরিবার ভাসানচরে যাচ্ছে। তাদের কাউকে জোর করা হয়নি। একই ক্যামেপর সাবেক মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, এ ক্যামপ থেকে আবদুস সালাম ও আবুল হাশেম মাঝির পরিবারসহ বেশকিছু পরিবার নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছে। প্রথম দফায় যারা গেছেন, তাদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধার খবর জেনেই নতুন করে অনেকেই যেতে আগ্রহী হয়েছেন।
মাঝিদের মতে, আগে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিতে অনেক বোঝাতে হয়েছে। কিন্তু ২০ দিনের মধ্যে চিত্র পাল্টেছে। এবার রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে নিজেরাই তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ফলে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যামপ থেকে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে রোববার বিকাল  থেকে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে জমা হতে থাকে। সোমবার সকালেও অনেকে এসে যোগ দিয়েছেন। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাসে চরে ভাসানচরের পথে চট্টগ্রামে রওনা দেন।
সূত্রমতে, উখিয়া ও টেকনাফের তালিকাভুক্ত ক্যামপ ছাড়া বাকি সব ক্যামপ থেকেও যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৮ ডব্লিউ ক্যামপ থেকে যাচ্ছে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার। উখিয়ার কুতুপালং-৪ নম্বর ক্যামপ থেকে ২৭ পরিবার যাচ্ছে। কুতুপালং-২ ডব্লিউ থেকে যাচ্ছে ২৪ পরিবার। সবমিলিয়ে এবার প্রায় এক হাজার শরণার্থী ভাসানচরে যাচ্ছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031