অফিসিয়ালি এ টাকাগুলো আসাতে আমাদের অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, গত ছয় মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি কালো টাকা সাদা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে আজ বুধবার অনলাইনে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ছয় মাসে কালো টাকা সাদা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার উপরে, করোনার মধ্যে এটা কীভাবে হলো জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সাদা করতে চাই বলে সাদা হলো। আমাদের বাজেটে আছে। বাজেট বক্তৃতায় আছে, আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অ্যাড্রেস করতে চাই। প্রথমেই আমাদের রেমিট্যান্সে প্রণোদনা চালু করেছি। তিনি বলেন, আরো একটা ক্ষেত্র রয়েছে, যেটা প্রতিটা দেশের জন্য বড় এলাকা। সেটা হলো আবাসন খাত।

এই আবাসন খাতে স্ট্যাম্প ফি ও ডিউটি বাড়তি থাকার কারণে কোনো রেজিস্ট্রেশন হয় না। ফলে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। বাড়ি বিক্রি হচ্ছে অথচ বিক্রি দেখাচ্ছে না। আর বিক্রি যেখানে ১০ টাকা সেটা দেখাচ্ছে ১ টাকা। ১০ টাকার উপরে গেলে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়, সেজন্য স্ট্যাম্প ডিউটি কমিয়ে দিয়েছি। এরকম যেখানে যেখানে হাত দেয়া দরকার সেখানে সেখানে করেছি। সেগুলো করার কারণেই এখন কালো টাকা সাদা হচ্ছে। মুস্তফা কামাল বলেন, গত এক বছরে বা ছয় মাসে আমাদের রেমিট্যান্স অর্জন হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। পুরো বছরে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা বেশি আসবে। এই টাকাগুলো কোথায় যাবে, পুঁজিবাজারে যাবে। অফিসিয়ালি এ টাকাগুলো আসাতে আমাদের অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই টাকাগুলোর মাল্টিটেরিফাই অনেক বেশি। এতে একজনের একটা ট্রানজেকশন ১০ হাত ঘুরে। এতে অর্থনীতি অনেক বেগবান হচ্ছে। ‘আমি মনে করি আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। পুরোপুরি না হলেও বেশির ভাগই আমরা সফল হয়েছি। আমরা চাই কালো টাকা সাদা হোক। যখন কালো হয়ে গেছে তখন সাদা হবে। আর কালো হওয়ার কারণ নিয়ে অনেক বার ব্যাখ্যা দিয়েছি।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকা আমাদের পলিসিগত কারণে কালো হয়। অনেকেই ট্যাক্স দেয় আবার অনেকেই ট্যাক্স দেয় না। আবার ট্যাক্স রেট অনেক বেশি ছিল। আস্তে আস্তে যদি এগুলো কমিয়ে আনতে না পারি তাহলে হবে না। আমাদের সুদের হার অনেক বেশি ছিল। এত বেশি সুদহারে কোনো দেশে শিল্পায়ন হয় না। পাশাপাশি কোনদিন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। আমরা সেখানেও সফল, মোটামুটি আমরা যেটি করে দিয়েছি সেটা সবাই গ্রহণ করেছে। এখন যে ৬ শতাংশে ঋণ পাচ্ছে, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশে টাকা রাখলে উল্টো টাকা দিতে হবে। সেখানে লাভ পায় না, যদিও পায় সেটা এক থেকে দেড় শতাংশ। সেখানে আমাদের দেশে ৬ শতাংশ পাচ্ছে। এটা হলো আমাদের ইতিবাচক দিক। এটা আমাদের দেখতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের অনেকের টিআইএন নম্বর আছে কিন্তু আমরা ট্যাক্স পাচ্ছি না। টিআইএন নম্বর দিয়ে কী হবে যদি ট্যাক্স না পাই। সেই কাজটি করার জন্য আমরা ফুল অটোমেশনে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত অটোমেশন শেষ করতে না পারি ততদিন পর্যন্ত আমাদের এ সমস্যা থাকবে। সেজন্য সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে রাজস্ব খাতে অটোমেশনের। পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারে যদি বিদেশি বিনিয়োগ থাকতো তাহলে তারা যেকোনো মুহূর্তে পুঁজি তুলে নিতে পারতো। যেটা আমরা ১৯৯৭ সালে দেখেছি। সাউথ এশিয়ার সঙ্গে যেটা হলো। সে সময় বিদেশিদের টাকা তারা তুলে নিয়ে যাওয়ায় অর্থনীতি বসে গেছে। আমাদের এ ধরনের চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ, আমাদের ফিসক্যাল পলিসি ও মনিটরি পলিসি, বাজেট, পঞ্চবার্ষিক প্ল্যান সঠিক আছে। সেজন্য আমরা ভালো আছি। আওয়ামী লীগের এই মেয়াদে ক্ষমতায় আসার দুই বছর পূর্তি হলো- এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কতটা করলাম আর কতটা করতে পারলাম না সেটা মূল্যায়ন তো আপনারা করবেন। আমার কাজ হচ্ছে কাজ করা দেশ ও দেশের প্রতিটা নাগরিকের জন্য। তিনি বলেন, আমাদের আমদানি কমে গেছে, যদি আমদানি বেশি থাকতো তাহলে আমাদের ডিউটি বাড়তো। আমাদের আয়করের হার ভালো আছে। তুলনামূলক আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো আছি।
Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031