সরকার চালিয়ে যাচ্ছে গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সব চেষ্টাই । কিন্তু কোনো ফল আসছে না বলে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মিয়ানমারের অসহযোগিতা এবং অঙ্গীকার রক্ষা না করাতেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না বলে জানালেন মন্ত্রী।

বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কথা বলেন। এর আগে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির প্রথম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সভায় পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, জননিরাপত্তা সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব দিক থেকে চেষ্টা করছি, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা যেখানে যাওয়া প্রয়োজন সেখানে যাচ্ছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছেন, একটা ফর্মুলা দিয়েছেন। আমি নিজে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়েছেন, আমাদের বর্ডার গার্ড লেভেলে আলোচনা চলছে। মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে এসেছেন। সবই হচ্ছে, কিন্তু তারপরও রেজাল্ট হচ্ছে না।’

মিয়ানমারের অসহযোগিতাকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (মিয়ানমার) অনেক কিছু কমিটমেন্ট করেছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। সেজন্যই আমরা বলছি, তারা যেগুলো বলছে সেগুলো করার জন্য আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তিনি তিনটি দেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন, সেটাও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভায় জানিয়েছেন।’

মিয়ানমারের এই আচরণের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে যে ফোরাম আছে আমাদের সরকার সে ফোরামকে জানাচ্ছে এবং সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি ওআইসির এক সদস্য জাম্বিয়া মামলাও করেছেন। সে মামলাও চলছে এবং সব কিছুই চলমান রয়েছে, কোনো প্রচেষ্টাই বাদ থাকবে না।’

সভার আলোচনার ব্যাপারে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সভায় অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ক্যাম্পগুলোর চারিদিকে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছিল। যাতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নাগরিকরা যত্রতত্র যাতায়াত করতে না পারে। তারাও যাতে অন্য রকম পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্যই কাঁটাতারের ব্যবস্থা। শুধু কাঁটাতারের বেড়া নয়, সেখানে হাঁটার রাস্তা থাকবে, টাওয়ার থাকবে, সিসি ক্যামেরা থাকবে।’

রোহিঙ্গাদের কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ক্যাম্পগুলোতে দেখা যায়, যারা অবস্থান করছেন তারা মাঝে মাঝে মিয়ানমারে চলে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ইয়াবা নামক মাদক এনে এবং লাভ-লোকসানের বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি এমনকি কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য দিনে-রাতে টহল আরও জোরদার করা হচ্ছে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031