বৃটেনে নতুন করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট আরো বেশি ভয়াবহ হতে পারে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন। তবে এই ভাইরাস কতভাবে তার রূপ বদল করেছে তা অনিশ্চিত। বিজ্ঞানীরা বা টিকা আবিষ্কারকরা বলছেন, বর্তমান যেসব টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে সেগুলোই এই নতুন রকম ভাইরাসের চিকিৎসায় কাজ করবে। এরই মধ্যে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ বেশি গতিতে সংক্রমণযোগ্য এই ভাইরাসের নতুন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে বৃটেনজুড়ে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ডাউনিং স্ট্রিটে সংবাদ সম্মেলনে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, প্রথমে করোনা ভাইরাসের এই ধরনটি শনাক্ত করা হয়েছে লন্ডন এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। দৃশ্যতা তা অধিক দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এখন কিছু তথ্যপ্রমাণ মিলছে যে, মৃত্যুহার বৃদ্ধির সঙ্গে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট যুক্ত।

এই ভ্যারিয়েন্টের বড় রকম প্রভাবের কারণে বৃটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যখাত (এনএইচএস) এত বেশি চাপে রয়েছে। ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্টটি কত বেশি ভয়াবহ তা নির্ধারণের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড, ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন, লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার। এসব প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকর্ম দেখতে পেয়েছেন নিউ অ্যান্ড এমার্জিং রেসপিরেটরি ভাইরাস থ্রেটস এডভাইজরি গ্রুপ। তারা মনে করছে, এই ভাইরাসটিকে যতটা ভয়াবহ মনে করা হচ্ছিল বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ হতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত যেসব ডাটা পাওয়া গেছে তাকে যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করেন না সরকারের প্রধান বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আমাদের আরো ডাটা প্রয়োজন। তবে স্পষ্টত এটা খুব উদ্বেগের বিষয় যে, একদিকে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যৃহারও বেড়েছে। উল্লেখ্য, এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে নতুন করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট মূল ভাইরাসের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ থেকে ৭০ ভাগ বেশি গতিতে বিস্তার লাভ করে। ইঙ্গিত মিলেছে যে, শতকরা ৩০ ভাগের বেশি ভয়াবহ এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ৬০ বছর বয়সী মানুষদের  মধ্যে পুরনো ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ১০০০ মানুষে ১০ জন মারা যেতে পারেন। কিন্তু নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে এই মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১৩।

করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত করা হয় কেন্টে গত সেপ্টেম্বরে। কিন্তু এখন ইংল্যান্ডে এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে এই ভাইরাসটি সবচেয়ে বেশি কমন। শুধু তা-ই নয়। এর বিস্তার ঘটেছে কমপক্ষে ৫০টি দেশে। বৃটেনে যে ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে তার বিরুদ্ধে ফাইজার এবং অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার টিকা কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে অন্যখানে। স্যার প্যাট্রিক বলেছেন, আরো দুটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গভীর উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই দুটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে। ফলে এ বিষয়টিতে খুব সতর্কতার সঙ্গে গবেষণা প্রয়োজন। এর প্রেক্ষিতে বাইরে থেকে যাতে বৃটেনে নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে আরো কড়াকড়ি আরোপের কথা ভাবছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বৃটিশ সরকার দক্ষিণ আমেরিকা, পর্তুগাল এবং আফ্রিকার অনেক দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। নতুন ভ্যারিয়েট প্রতিরোধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031