‘ফেসবুকে আপনার ছবি এতো কম কেন। আপনি তো বেশ ফ্যাশন করেন, আপনার ছবি এতো কম হওয়ার কথা না।’ জবাবে ভার্সিটি পড়ুয়া জান্নাতুল ফেরদৌস নামের মেয়েটি ছোট্ট করে বলেছিলেন- ‘তাই’। তারপরই বেশ কয়েক ছবি পাঠান ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে। তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টার তার প্রোফাইলের ছবিও। এবার অবাক-বিস্ময়ে ছবিগুলো দেখতে থাকেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সজীব হাসনাত।
তারপর জান্নাতুল ফেরদৌস জানতে চান, ছেলেটি আরও ছবি দেখতে চায় কি-না। একদম হট। টাইট শর্ট গেঞ্জি আর টাউজার পরিহিত ছবি পাঠান জান্নাতুল। কোনো এক জিমনেশিয়ামে তোলা ছবি।

জান্নাতুল এবার আরও একধাপ এগিয়ে জানতে চান, আরও দেখার ইচ্ছে আছে কি-না। তরুণ ছেলেটিও কম যান না। জানান, সবই তো দেখতে ইচ্ছে করে।
জান্নাতুল ফেরদৌস এবার বলেন, ‘বাহ বাহ, এত শখ। ওকে ধীরে ধীরে সবই হবে।’ এই ‘ধীরে ধীরে সবই হবে’-বাক্যে জড়িয়ে যান সজীব হাসনাত। আশায় আশায় এগিয়ে যান। জান্নাতুল ফেরদৌস ছবির  খেলায় তাকে বন্দি রাখেন। প্রতিদিন অন্তত একটি ছবি পাঠান।

অশ্লীলতাকে হার মানানো ছবি। সজীব এবার অনুনয় করেন। দেখা করতে চান যে কোনো মূল্যে। করোনার অজুহাত দিয়ে জান্নাতুল  ফেরদৌস জানান, এখন না। পরিস্থিতি ভালো হলেই দেখা হবে। ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াবেন। তিনিও সজীবের মতো একজন ভালো বন্ধু চান।
নিজেকে একটি প্রাইভেট ভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্রী পরিচয় দিয়ে শ্যামলীর বাসার লোকেশনও জানিয়ে দেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই বাসাতেই সজীবকে ডাকবেন। বাসায় মা, ছোট বোন আর তিনি থাকেন। বাসাতেই আড্ডা দেয়া যাবে। মা অসুস্থ। বাবা থাকেন দেশের বাইরে। সব মিলিয়ে সুযোগের কমতি নেই। মাত্র কয়েক দিনের পরিচয়। তাও ফেসবুকে। সজীব রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। প্রোফাইলে সুন্দরী মেয়ের ছবি দেখেই মূলত বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট পাঠান। তারপর অল্পদিনেই গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। দ্রুত গভীর হতে থাকে..।

এরমধ্যেই হঠাৎ এক রাতে জান্নাতুল ফেরদৌসকে অনলাইনে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অফলাইন দেখাচ্ছে। ফোন দিলেও রিসিভ হচ্ছে না। দুশ্চিন্তায় পড়ে যান সজীব। পরদিন দুপুরে একটা ক্ষুদেবার্তা। ‘মা অসুস্থ। গত রাত থেকে মাকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। কথা বলার মতো অবস্থা নেই। সম্ভব হলে ২০ হাজার টাকা দিও, পরে ফিরিয়ে দেব।’ সঙ্গে একটি বিকাশ নম্বর। সজীব দ্রুত টাকা পাঠান। তারপর কল দেন। রিং হয়। কিছুক্ষণ পর নম্বর বন্ধ। তারপর তিনি অপেক্ষায় থাকেন ফোনটি অন হবে। কল আসবে। এক দুই তিন করে দিন যায়.. কিন্তু কল আর আসে না। জান্নাতুলের ফোন নম্বরটিও সচল হয় না।এ বিষয়ে সিটিটিসি’র সাইবার ক্রাইম তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি ফেইক আইডি। ওই আইডিতে ব্যবহৃত ছবি অন্য কারও। অন্যের ছবিই সজীবের কাছে পাঠানো হতো। হয়তো ছবি এডিট করে নগ্ন করে পাঠানো হতো। এমন অনেক কিছুই হতে পারে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031