বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরো একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িস্থ বিএম কন্টেনার ডিপোতে । অপরদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে মারা গেছে একজন। এ ২ জনসহ সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪৫ জনে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে কন্টেনার সরাতেই একটি মরদেহ বের হয়ে আসে। একই সময়ে একটি মাথার খুলিও উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে ঘটনার ৮৬ ঘণ্টা পর বিএম কন্টেনার ডিপোর আগুন গতকাল নিভে গেছে। তবে গত সন্ধ্যায়ও কয়েকটি কন্টেনার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ রকমের বিপর্যস্ত হয়ে উঠা বিএম কন্টেনার ডিপোতে পুড়ে যাওয়া কন্টেনারগুলো একপাশে সরিয়ে ভালো কন্টেনারগুলো আলাদা করার কার্যক্রম চলছে। কন্টেনার সরানোর কার্যক্রম চলার সময় হঠাৎ করে কন্টেনারের নিচ থেকে একটি মরদেহ বের হয়। তবে এটি বিকৃত হয়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে একটি মাথার খুলিও একইভাবে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে যে, কন্টেনারের নিচে বা ধ্বংস্তূপে আরো লাশ পাওয়া যেতে পারে।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ বীরের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেলের নেতৃত্বে মেজর শাফিন ১৮ বীরের সদস্যদের নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহায়তায় ডিপোর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সেনাবাহিনী মোতায়নের পর ওই ডিপোতে নতুন করে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী ডিপোকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছে। কর্নেল আরিফ বলেন, বিএম কন্টেনার ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিভেছে। আগুন নেই, তবে ধোঁয়া আছে কিছু জায়গায়। কন্টেনারের ভেতরে রপ্তানি পোশাকের পণ্য আছে। সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ একটি মরদেহ এবং এর আগে একটি খুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মরদেহ পুরোপুরি আগুনে ঝলসে যাওয়া। এতে করে এটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা হবে বলেও সূত্র জানিয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে মারা যায় মাসুদ রানা নামের একজন শ্রমিক। মাসুদ রানা ডিপোতে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করতেন। তার বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায়। এ নিয়ে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৫ জনে।

ঘটনার ৮৬ ঘণ্টা পর বিএম কন্টেনার ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিভেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে গতকালও কয়েকটি কন্টেনার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, কন্টেনারের ভিতরে থাকা তৈরি পোশাক পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এগুলোর ভিতরে ধিকিধিকি করে কিছু আগুন থাকতে পারে। পানি ছিটানোর পর এসব কন্টেনার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে বলে উল্লেখ করে বলেছে যে, ডিপোতে আর আগুন ছড়িয়ে পড়ার কোনো আশঙ্ক্ষা নেই।

কন্টেনার যত দ্রুত স্তূপ থেকে নামিয়ে আনা যাবে তত দ্রুত তাদের পক্ষে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেনের  জানান, মঙ্গলবার রাতে তাদের ৬টি ইউনিটের ৪২ জন আগুন নির্বাপণের কাজ করেছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031