ইজারাদাররা রাঙ্গুনিয়ায় গাড়ি ও জনসাধারণের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে হাট বসানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানছে না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দখল করে বসেছে পশুর হাট। এতে গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। দুর্ভোগে পড়ছেন সড়কে যাতায়াতকারীরা। এছাড়া ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে উপজেলার ১২টি বাজার ইজারা দেয়া হলেও এসবের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র পশুর হাট বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা এসব হাট বসিয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ইজারাকৃত বাজারগুলোতেও মানা হচ্ছে না ইজারার শর্ত।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারিভাবে ১০টি বাজার ইজারা দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়ার ব্রহ্মোত্তর রাস্তার মাথা হাট, মরিয়মনগর চৌমুহনী বিল হাট, কোদালা বাজার, পূর্ব চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাট, ধামাইরহাট বাজারের মুখ থেকে ঘাগড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের হাট, পদুয়া রাজারহাট বাজার, শিলক দীঘিরপাড়, পোমরা শান্তিরহাট, বেতাগী রামগতিরহাট আফজাল চৌধুরী দিঘির পাড়, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া রাজারহাট বাজার। অন্যদিকে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার পক্ষ থেকে গোডাউন ও রোয়াজারহাট বাজারে পশুর হাট ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারাদারদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা শর্ত দেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল, প্রধান সড়ক থেকে ১০০ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে পশুর হাট বসাতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সড়কের যানবাহন চলাচল যাতে বিঘ্নিত না হয়। সড়কের পাশে গরু-ছাগল রাখা যাবে না। কিন্তু এই শর্তের ছিটেফোঁটাও মানা হচ্ছে না পশুর হাটে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কাপ্তাই সড়কের তিনটি স্পটে এদিন পশুর বাজার বসেছে। এর মধ্যে গোচরা চৌমুহনী পশুর বাজার সরকারি ইজারাভুক্ত না হলেও সাপ্তাহিক বাজার হিসেবে এদিন হাট বসানো হয়েছে। এছাড়া গোডাউন ও মরিয়মনগর চৌমুহনী এলাকায় পশুর হাট বসেছে। এই তিন হাটই বসেছে কাপ্তাই সড়ক দখল করে।
সড়কের পাশেই সড়ক ও ফুটপাতে গরু রাখার জন্য শেড তৈরি করে চলেছে বেচাকেনা। ফলে এই তিনটি বাজারের মধ্যে সারাদিনই যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তিতে ছিল যাত্রীরা। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে সড়কে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। ৫ মিনিটের এই সড়ক পার হতে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের।
মরিয়মনগর চৌমুহনী বাজারের ইজারাদার মুজিবুল হক হিরু বলেন, সড়ক থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পশুগুলো বাধার ব্যবস্থা করেছি। আর সড়কে যেনো কোনো প্রতিবন্ধকতা না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। মাইকে প্রতিমুহূর্তে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
তবে অবৈধ পশুর হাট ও সড়কের উপর বাজার না বসাতে এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। তারপরও সড়কের এই পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, সড়কে যাতে মানুষের ভোগান্তি কম হয় এবং অবৈধ বাজার বন্ধে মাঠে রয়েছে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন। শর্ত মেনে চলতে ইজারাদারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং বাজারগুলোতে মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে।
বাঁশখালী প্রতিনিধি : বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৩০টির মত পশুর হাট বসেছে। তবে একমাত্র প্রধান সড়কের উপর গরুর বাজার হওয়াতে পুকুরিয়া, গুনাগরী, টাইমবার বাজার ও চাম্বলসহ পুইছড়ি পর্যন্ত চলাচলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। বিশেষ করে পুকুরিয়া থেকে প্রেমবাজার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গরুর বাজার একমাত্র প্রধান সড়কে হওয়ায় ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। বাঁশখালী হয়ে দক্ষিণের পেকুয়া, চকরিয়া, কঙবাজারগামী যাত্রীরা বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পশুর হাটে এসে কেউ যাতে প্রতারিত কিংবা সমস্যায় না পড়ে তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সাধারণ জনগণ যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে তার জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিটি এলাকায় বর্জ্য যাতে নিদিষ্ট স্থানে পুঁঁতে ফেলে সাধারণ জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031