জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন নাগরিকদের কথা চিন্তা করে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। ১২.৪৫ একর সরকারি খাস জমির উপর নির্মিত হতে যাওয়া এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কর্ণফুলী লুকআউট’। এতে বিশ্ববিখ্যাত লন্ডন আইয়ের আদলে তৈরি করা হবে ফেরিস হুইল (বিশালাকার নাগরদোলা)। কিডস জোন থেকে শুরু করে প্রকল্প এলাকায় রাখা হবে নাগরিক সুবিধার নানা উপকরণ। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ডিজাইন প্রস্তুত হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।

গতকাল বুধবার সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেছেন। কোনোরকম রিভিউ প্রয়োজন না হলে এক সপ্তাহ পর বিআইডব্লিউ ঘাট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কর্ণফুলী লুকআউটে একটি ছোট ফুটবল মাঠ তৈরি করা হবে। পাশাপাশি টেনিস, বাস্কেটবল, ভলিবল কোর্ট, ক্লাব হাউস তৈরি করা হবে। এছাড়া বিশ্ববিখ্যাত লন্ডন আইয়ের আদলে করা হবে ফেরিস হুইল। প্রকৃত পার্কে রূপ দিতে সেখানে নির্মাণ করা হবে মুক্তমঞ্চ, বোট মিউজিয়াম, কিডস জুন, ফুট কোর্ট, পার্কিং, পিকনিক স্পট এমনকি তৈরি করা হবে ওয়াকওয়েও।

বোট মিউজিয়াম প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, এটির নাম দিচ্ছি আমরা বোট অব বেঙ্গল। সবরকম বোটের স্থিরচিত্র (ছবি) সংগ্রহ করে বোট মিউজিয়ামে রাখা হবে। ইতোমধ্যে সেটি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। নাগরিকরা যাতে শুয়ে–বসে প্রকৃতি উপভোগ করতে পারেন সেজন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা। খাস জমিতে অপদখল ও নদী দূষণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়নে আমরা কর্ণফুলী লুকআউট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পের নাগরিক সুবিধা প্রদানের কাজটি করবে সিটি কর্পোরেশন। তাদের তহবিল থেকে তারা তা করবে। আমরাও নানাভাবে সহযোগিতা করব।

জমির মালিকানা জেলা প্রশাসনের হাতে থাকবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা কর্ণফুলী লুকআউট প্রকল্পের পুরো এলাকা সবুজে পরিণত করব। নাগরিকদের আনন্দ দিতে যা যা করা প্রয়োজন সেটিও দেখব। তিনি বলেন, আরএস জরিপ থেকে শুরু করে হাল বিএস জরিপেও কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী জায়গাটি সরকারি খাস জমি। উন্মুক্ত এ জমির উপর গ্রিন জোন ও বিস্তীর্ণ পার্ক নির্মিত হয়ে গেলে নগরবাসীর চিত্তবিনোদনের জন্য একটা বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর শিশু–কিশোরদের খেলাধুলার সুযোগ–সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কর্ণফুলী লুকআউট প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সিটি মেয়রকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গতকাল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের সময় এ আহ্বান জানানো হয়। এমন একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও মেয়রকে সাধুবাদ জানান। কার্যক্রমের দ্রুত বাস্তবায়ন যেন করা হয় সেজন্য মেয়রের কাছে উপস্থিত এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের সময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, জেলা প্রশাসনের খাস জমিতে কর্ণফুলী নদী সুরক্ষিত রেখে নদীর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এবং শিশু–কিশোরদের খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্প এলাকায় বিস্তীর্ণ সবুজ পার্ক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031