পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ বেড়েছে মহাসড়কে । অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, বিপরীত পাশের সড়ক খালি না থাকলে দীর্ঘ সময় ওভারটেক করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে চালক নিজের ঝুঁকিতে ওভারটেক করেন। হিসেবে গড়মিল হলেই দুর্ঘটনা। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক চালক বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে যানবাহন চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

মহাসড়কে গাড়ির বেপরোয়া গতি রোধে এবং দুর্ঘটনার হার কমাতে চালু হচ্ছে ‘ডিজিটাল অটোফাইন সিস্টেম’। প্রস্তাব করা হয়েছে ‘অটোমেটিক ডিটেকশন ব্যবস্থা’ চালুর। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিস্টেম চালু হলে অটো ফাইন দেওয়ার ভয় থাকার পাশাপাশি কোনো চালক যখন বুঝতে পারবেন যে, তিনি নজরদারিতে রয়েছেন তখন তিনি নির্ধারিত গতির বাইরে গিয়ে গাড়ি চালাবেন না। এছাড়া উল্টো পথে গাড়ি চলাচলেরও সুযোগ থাকবে না।

হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান এ প্রসঙ্গে বলেন, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। শুধু ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক নয়, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা এবং ডাকাতির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো অনেকটাই সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা (ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা) বসানোর কাজে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হাইওয়ে পুলিশ এরই মধ্যে সংশোধিত প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

জানা গেছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি বেপরোয়া গতি ঠেকাতে অটোমেটিক ডিটেকশন ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এ ব্যবস্থায় বেপরোয়া গতির গাড়িগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মামলার আওতায় চলে আসবে। এমনকি দায়ের করা মামলার তথ্য গাড়ির মালিকের মোবাইল ফোনে চলে যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাবনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কাজ করবে হাইওয়ে পুলিশ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসিটিভি প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এখন প্রকল্প সংশোধনের কাজ যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। ‘ডিজিটাল অটোফাইন সিস্টেম’ নামে একটি অ্যাপ এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। নির্ধারিত গতিসীমার বেশি গতিতে অর্থাৎ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে সেই গাড়ির বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানা বা মামলা হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়কে নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী সিসিটিভি স্থাপন করা হবে, যা মহাসড়কের প্রতিটি জায়গাকে দিনে ও রাতে নিরাপদ রাখবে। দিন ও রাত বিবেচনায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪৯০টি লোকেশনে বিভিন্ন ধরনের ১৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসবে। ব্যবহার করা হবে পিটিজেড ড্রোন ক্যামেরা, লং ভিশন ক্যামেরা, বুলেট ক্যামেরা, প্রিটি জেড সলস্প্রে ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা। কুমিল্লা হাইওয়ে রিজিওন, গাজীপুর রিজিওন, দাউদকান্দি ও চট্টগ্রামের বারো আউলিয়ায় মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে। মূল কমান্ড সেন্টার থাকবে মেঘনা ঘাটে। ফলে স্থানীয়ভাবে এবং হাইওয়ে পুলিশের সদর দফতর থেকেও মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলো তদারক করা যাবে।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে কেউ গাড়ি চালালে সড়কে বসানো ডিটেক্টেড মেশিনের মাধ্যমে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাবে। একইসঙ্গে মামলার বিষয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ির মালিকের কাছে এসএমএস চলে যাবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031