চলতি বছরেই নির্মাণাধীন দেশের আরেকটি বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষের দিকে; সমুদ্র ঘেঁষা মাতারবাড়ীর এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে । সাত বছর আগে কক্সবাজারের সাগর উপকূলের ইউনিয়ন মাতারবাড়ীতে জাপানি অর্থায়নে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার পাশাপাশি কাজ শুরু হয় কয়লা খালাসে বন্দরের অবকাঠামো ও জেটি নির্মাণের কাজও। খবর বিডিনিউজের।

সরেজমিন গিয়ে মহেশখালী উপজেলার এ ইউনিয়নে দেখা গেছে, বিশাল ব্যয়ের নির্মাণাধীন বৃহৎ এ প্রকল্পের কাজ অনেকটাই গুছিয়ে এনেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল)। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কয়লা খালাসে জাহাজ ভেড়াতে জেটির কাজও প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজ ভেড়াও শুরু হয়েছে। পুরো এলাকার চালচিত্র পাল্টে দিয়েছে এ মেগাপ্রকল্প।

প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক জানান, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগেই এ কেন্দ্রের কাজ উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যেটা (প্রথম ইউনিট) ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে করার কথা, সেটা আমরা আশা করি ডিসেম্বরেই পুরোদমে চালু করতে পারব। আর দ্বিতীয়টা আমরা চালু করার চিন্তা করতেছি নেঙট জুলাই।

এখানে প্রথমটি থেকে ৬০০ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয়টা থেকেও ৬০০ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। তবে প্রতি ৬০০ থেকে আদারস খরচ হিসেবে ৬.৮ শতাংশ বিদ্যুৎ চলে যাবে, বাকিটা যুক্ত হবে।’

৫১ হাজার সাড়ে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পের হালনাদাগ তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে জেটি ও ভৌত অবকাঠামোর কাজ ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে, সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর কাজ হয়েছে ৯০ শতাংশ।

প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক নাজমুল বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। জাহাজ থেকে কয়লা নামানোর সময় মাত্র একবার ওই কয়লা দেখা যাবে। তারপর ওই কয়লা সরাসরি জেটি থেকে প্ল্যান্টে চলে যাবে। এতে পরিবেশ দূষিত হবে না।

জাইকার অর্থায়নে ৭ বছর মেয়াদে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করছে জাপানের সুমিতোমো, তোশিবা ও আইএইচআই কোম্পানির কনসোর্টিয়াম।

প্রকল্পের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে নাজমুল বলেন, আমাদের এই প্রজেক্টের দুইটা পোর্সন, এর মধ্যে একটা হচ্ছে পাওয়ার প্ল্যান্ট, আরেকটা হচ্ছে পোর্টের পোর্সন। পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে আমরা ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করব। এখানের পুরো কাজটা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। অউসো মারুসহ ছয়টা জাহাজ এসেছে সেখান থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা অলরেডি অনলোড হয়েছে, এটা আমরা রিজার্ভ করেছি। আগামী মাসে নেঙট জাহাজ যেটা– সেটাও চলে আসবে। বর্তমানে সাত থেকে আট হাজার মানুষ এ প্রকল্পে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরোদমে চালু হলে বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় ৬০০ মানুষের প্রয়োজন পড়বে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031