কোতোয়ালী থানা পুলিশ চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে সুমন সাহা (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে । মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে সোমবার (২৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন রেয়াজুদ্দিন বাজারে আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী রোডের আরএস টাওয়ার নামের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ৫নং বরমা ইউপি এলাকার বাইনজুরীর মৃত ইছহাক মিয়া ছেলে মফিজুর রহমান দুলু (৫৬), নগরের কোতোয়ালীর ৮৫নং আলকরন এলাকার মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. মামুন (৩৮) ও একই এলাকার এনায়েতবাজারের ২নং গলির আব্দুল আলী সওদাগরের ছেলে নুর হাসান রিটু (২৮)।

পুলিশ জানায়, সুমন দীর্ঘদিন ধরে দুলুর রেয়াজউদ্দিন বাজারস্থ ভাড়াকৃত রুমে আসা যাওয়া করত এবং সেখানে গিয়ে তারা সবাই একসাথে মাদক সেবন করে, আড্ডা দেয়। দুলু ও ভিকটিম সুমন স্বর্ণ চোরাচালান ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিল। এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়। লেনদেনের বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সুমনের কাছ থেকে দুলু টাকা পাওনা থাকলেও টাকা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।

দুলু বাকবিতণ্ডার জের ধরে নিজে ভিকটিম সুমনকে মামুন, নুর হাসান রিটুদের সহায়তায় লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস, দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

পুলিশ আরও জানায়, ভিকটিম সুমন মাদক সেবনরত অবস্থায় দুলুকে স্বর্ণ ক্রয়ের জন্য টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। বিষয়টি মামুন জানতে পেরে দুলুর মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয় যে, সুমন দুলুকে মারার জন্য লোক ঠিক করেছে, তাকে টেকনাফ নিয়ে যাবে বলেছে, তার জন্য কয়েকজন লোক ঠিক করেছে এবং ইতিমধ্যে কয়েকজন লোককে দিয়ে দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজারস্থ অফিস রেকি করিয়েছে।

এ বিষয়ে সন্দেহ ঢুকায় ভিকটিম সুমন গত ২৬ নভেম্বর রাতে দুলুর ভাড়াকৃত রুমে মাদক সেবন করতে গেলে সেখানে তাকে আটক করে তাকে মারার জন্য কাকে ঠিক করেছে এবং দুই জন লোক দিয়ে তার বাসা রেকি করার বিষয়ে বারংবার জিজ্ঞেস করে।

এই বিষয়ে সুমন কোন তথ্য না দেওয়াতে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে মারধর করে সুমনের কাছ থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা করে।

পরবর্তীতে মামুন ও নুর হাসান রিটুদেরকে দিয়ে মারধর করে তথ্য বের করার চেষ্টা করেও না পেয়ে সুমনকে হাত বেধে উলঙ্গ করে এলোপাতাড়ী মারধর করে হত্যা করে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বর্তমানে এডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাতে তারা সুমন সাহার বাসা আরএস টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় ঢুকে তাকে মারধর করে করে। এতে তার মৃত্যু হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের জখম রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930