দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে মারধরের হুমকি দেওয়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর (৫৬) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ।

এর মধ্যে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখায় একটি মামলায় বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুজিবুল হক চৌধুরীর পাশাপাশি তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরীকেও (৪১) আসামি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলা দুটির এজাহার আজ (রোববার) চট্টগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম।

উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে চাম্বল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় তিনি পিটার হাসের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

তিনি তার বক্তব্যে বিএনপি-জামায়াতের পাশাপাশি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করেন। এর আগে মুজিবুল হক চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় ইভিএম বোতাম চেপে দেওয়ার জন্য ভোটকেন্দ্রে তাঁর লোক থাকবে বলে আলোচনায় আসেন।

তখন থেকে তিনি ‘টিপ মারা মুজিব’ নামে পরিচিতি পান।

চাম্বলে আয়োজিত সমাবেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্দেশে মুজিবুল হক বলেন, ‌‘পিটার হাস বলছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পিটার হাস আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আমরা মোটা চালের ভাত খাই। আপনি বিএনপির ভগবান। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ ইমান বেচি না। আপনাকে এমন মারা মারব, বাঙালি কত দুষ্টু তখন বুঝতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের বিরোধী ছিল। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ছিল, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিল। আপনারা যত কিছু করবেন করুন। বিএনপির ওপর ছড়ি ঘোরাতে পারবেন, আমাদের একটা কেশও ছিঁড়তে পারবেন না।’

মুজিবুল হক চৌধুরী গত বছরের ১২ অক্টোবর চাম্বল ইউনিয়নের দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে গত ১৫ জুন চাম্বল ছাড়া বাঁশখালীর সব কটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের প্রচারণার সময় চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী দফায় দফায় বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন। বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে তাঁর ইউপিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল।

প্রথমবার নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর গত বছরের ২৮ মে মুজিবুল হক চৌধুরী এক সভায় ‘বাটন টিপে দিতে কেন্দ্রে আমার লোক থাকবে’ মন্তব্য করেন। এরপর গত বছরের ২ জুন পুনরায় মুজিবুল হক চৌধুরী মন্তব্য করেন, ‘আমরা বললে সুষ্ঠু, আমরা না বললে অসুষ্ঠু। আঙুল তোমার, টিপ দেব আমি।’ তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্য ভোটের মাঠে পুনরায় ঝড় তোলে। এরপর নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি মুজিবের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। নানা বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মুজিবুল হক চৌধুরী ‘টিপ মারা মুজিব’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031