মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে । দেশটির পররাষ্ট্র দফতর সোমবার এক প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেছে। এতে আরো বলা হয় যে নির্বাচনে সব দল অংশ না নেয়ায় আমরা হতাশ।

সোমবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ করেছে, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যকে গ্রেফতার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে উদ্বিগ্ন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকের সাথে একমত যে এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ।

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনের সময়ে এবং এর আগের মাসগুলোতে যেসব সহিংসতা হয়েছে, তার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। আমরা এসব সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা সহিংসতা পরিহার করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আরো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো–প্যাসিফিক) অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করা, বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও নাগরিক সমাজের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এদিকে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি বলে মনে করছে যুক্তরাজ্য। নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না বলেও অভিমত ব্রিটেনের।

লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার (৮ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দেশটির মত প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড যথাযথভাবে মানা হয়নি। এছাড়া নির্বাচনে সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি বলে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না।

ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় উদ্বেগ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচন সামনে রেখে এবং নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায় যুক্তরাজ্য। রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সুশীল সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি মতভিন্নতা দূর করার আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্য।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031