বিশ্বজুড়ে ৫ কোটি শিশু গৃহহারা যুদ্ধ ও দারিদ্র্যের কারণে । মানবিক এ সঙ্কট চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছে ইউনিসেফ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, জাতিসংঘের এ এজেন্সি এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সহিংস সংঘাতের ফলে দুই কোটি ৮০ লাখ শিশু তার ‘শিকড়’ থেকে উৎখাত হয়েছে। প্রায় একই সংখ্যক শিশু উন্নত জীবনের সন্ধানে গৃহ ছেড়েছে। ইউনিসেফ প্রকাশিত রিপোর্টটির শিরোনাম ‘আপরুটেড: দ্য গ্রোয়িং ক্রাইসিস ফর রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট চিলড্রেন’। এতে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে শিশু শরণার্থীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। তাদের সংখ্যা এখন ৮২ লাখ। ইউনিসেফ এ রিপোর্টে বিশ্বে সবচেয়ে বিপন্ন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এসব শিশুকে। সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতা দিয়ে বলেছে, যদি সরকারগুলো এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে থাকবে। যুদ্ধ, সহিংসতা, দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন যা-ই বলা হোক না কেন এসব ঘটনার শিকার এই শিশুরা। অথচ তারা এর জন্য দায়ী নয়। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৫ সালের এক হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের এক তৃতীয়াংশই হলো শিশু। সব শরণার্থীর মধ্যে শিশু শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। ইউনিসেফের প্রোগ্রাম পরিচালক টেন চাইবান জেনেভায় এক বক্তব্যে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই শিশুরা শিশুই। তাদের সঙ্গে শিশুসুলভ আচরণ করতে হবে। তাদের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের শিক্ষা সহ সব সেবা পাওয়ার অধিকার আছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন শিশু শরণার্থীর সংখ্যা এক কোটি। এক কোটি শিশু রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছে। তাদের সে আশ্রয়ের কোন সুরাহা হয় নি এখনও। বাকি এক কোটি ৭০ লাখ শিশু তাদের দেশের ভিতরকার যুদ্ধের কারণে গৃহহারা। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, শিশু শরণার্থীদের মধ্যে শতকরা ৪৫ ভাগই দুটি দেশের। এ দেশ দুটি হলো সিরিয়া ও আফগানিস্তান। তার মধ্যে এক লাখ নিঃসঙ্গ শিশু ২০১৫ সালে ৭৮টি দেশে আশ্রয় চেয়েছে। এ সংখ্যা ২০১৪ সালের তিনগুন। যেহেতু এসব শিশুর কাগজপত্র নেই তাই তারা বেশি মাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আরও ২ কোটি শিশু অভিবাসী। দারিদ্র্য ও সহিংসতার কারণে তারা দেশ ছেড়েছে। এক্ষেত্রে তাদের সমুদ্রে পাড়ি দেয়ার সময়, সীমান্ত অতিক্রমের সময়, অপুষ্টিতে, পানিশূন্যতায় মারা যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তারা অপহৃত হতে পারে। ধর্ষিত হতে পারে। এমনকি তাদেরকে হত্যা করা হতে পারে। যখনই তারা অন্য দেশগুলোতে পৌঁছে তখনই তাদেরকে বৈষম্য ও অহেতুক আতঙ্কে পড়তে হয়। ইউনিসেফের এই রিপোর্টের লেখক এমিলি গারিন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031