ব্রিটিশ কনস্যুলেট অফিস সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনের ভিসা কার্যক্রম দিল্লিতে সরিয়ে নেয়ার পর এবার সিলেট থেকে। এতে সিলেটের ব্রিটিশ প্রবাসীদের ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভিসা কার্যক্রম দিল্লিতে সরিয়ে নেয়ায় এমনিতেই ব্রিটেন গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। বিশ্ব ক্রিকেটের বর্তমান সেনসেশন বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমানকে পর্যন্ত ভিসার জন্য হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। অথচ তিনি ব্রিটেনেরই একটি ক্লাবে খেলার জন্য গিয়েছিলেন। নানা অজুহাতে বারবার টালবাহানা করা হয়েছে তার ভিসার ক্ষেত্রে। অবশেষে তার ভিসার জন্য বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে আবেদন-নিবেদন করতে হয়েছে।

ব্রিটেনের ভিসা কার্যক্রম বাংলাদেশে থাকলে এমনটা হতো না বলে তখন আলোচনা ছিল।

ব্রিটেনে বর্তমানে লাখ দশেক বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন। অথচ এখানে কোনো ভিসা কার্যক্রম নেই। এখন আবার ব্রিটিশ বাংলাদেশি অধ্যুষিত সিলেট থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে দেড় দশক ধরে চলা কনস্যুলেট অফিস। দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে এ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তবে ইতিমধ্যে নগরীর কুমারপাড়ার কনস্যুলেট অফিসটি অনানুষ্ঠানিকভাবে গুটিয়ে নেয়া হয়েছে। কী কারণে অফিস গুটিয়ে নেয়া হলো তা স্পষ্ট নয় বলে জানান ইমিগ্রেশন অ্যাডভাইজার মাহবুব আহসান।

২০০১ সালে নগরীর কুমারপাড়ায় চালু হয় ব্রিটিশ হাইকমিশনের কনস্যুলেট অফিসটি। এখান থেকে সিলেটি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের পাসপোর্ট নবায়ন, নতুন পাসপোর্ট দেয়া, পাসপোর্ট হারানো গেলে ট্রাভেলিং ডকুমেন্ট দেয়া, জোরপূর্বক বিয়ে প্রতিরোধ, হয়রানির শিকার ব্রিটিশ নাগরিকদের আইনি সহায়তা দেয়াসহ বিভিন্ন সেবা দেয়া হতো।

এ ছাড়া এখান থেকে একসময় ব্রিটেন গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের ভিসার আবেদন নেওয়া হতো এবং ভিসা দেয়া হতো। পরে ভিএফএস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে সিলেট থেকে ব্রিটেনে গমনেচ্ছুকদের ভিসা আবেদন গ্রহণ ও ভিসা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে। এরপরও সিলেট থেকে কনস্যুলেট অফিস গুটিয়ে নেয়নি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। তবে এবার কেন সেই অফিস গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে তা কেউ বলছে না।

সিলেটে স্বতন্ত্র ব্রিটিশ কনস্যুলেট অফিস বন্ধ করে দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন প্রবাসীরা। প্রবাসীদের দেখভালকারী প্রতিষ্ঠান সিলেট ওভারসিজ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ ব্রিটিশ বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে ৯০ ভাগই সিলেটি, যাদের সিংহভাগ আবার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। এ ছাড়া  প্রায় ৩০ হাজার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী সিলেটে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ব্যক্তি ব্রিটিশ সরকারের পেনশন পান। সিলেটে কনস্যুলেট অফিস বন্ধ করে দেওয়ায় তারা বেশি সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

শামসুল আলম আরও বলেন, ‘প্রবাসীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটে স্বতন্ত্র ব্রিটিশ কনস্যুলেট অফিস খোলা হয়েছিল। কিন্তু সেটি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা হতাশ, উদ্বিগ্ন।’ তিনি জানান, ব্রিটিশ কনস্যুলেট অফিসের মাধ্যমে দেশে থাকা প্রবাসীরা দ্রুততার সঙ্গে যেকোনো সেবা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, সিলেটে স্বতন্ত্র ব্রিটিশ কনস্যুলেট অফিস থাকাটা সিলেটিদের জন্য ছিল গর্বের। ভিসা কার্যক্রম দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার পর এবার কনস্যুলেট অফিস সরিয়ে নেওয়াটা বাংলাদেশিদের জন্য চরম হতাশার।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031